Followers ...

Monday, May 31, 2010

এক অধ্যায়


আমার এখানে অনেকে আসে। অনেক তাড়া মাথায় নিয়ে কিছু একটা খুঁজে পাওয়ার আশায়; হয়ত বা হারিয়ে ফেলতে অনেক পুরনো স্মৃতি, কখন কখন নিজের জীবন টাও। শুধু আশ্চর্যে মোড়া অনিশ্চয়তার জীবনে কোন কোন মানুষ খুব মনে থেকে যায়। আর তাদের দুঃখগুলো কেন জানিনা খুব নিজের বলে মনে হয়। কিছু বলে বা করে হয়ত তাদের সান্ত্বনা দেওয়া যায়না, চোখের জলটাই সেখানে শেষ ঠিকানা হয়। 

   হকার দুলাল একটা কাঁটা পা বয়ে, মানুষের গালি-গালাজ কানে নিয়ে যেভাবে দিনের খাবারটুকু সংগ্রহ করত রুমাল বিক্রি করে; আর শ্যামল প্রায়ে ত্রিশ বছর ধরে চা বেচেও নিজের জন্য একটা স্থায়ী আস্তানা বানাতে পারলো না --- এইসব দেখে স্বাভাবিক নিয়মে জীবনের উপর রাগ আসাটা বাধ্যতামূলক; কিন্তূ আশ্চর্য এটাই যে জীবনটাকে এরা একান্ত আপন মেনে সাথে নিয়ে চলছিল। সকলেই নিজের ভাগ্য নিয়ে জন্মায়, আর সেই 'ভাগ্য' নিয়েই হয়ত একদিন মারাও যায়। কিন্তূ এই 'ভাগ্য'টা যে কে তৈরী করে দিয়ে সকলকে কঠিন পৃথিবীতে ছেড়ে পালিয়ে যায় -- সেটা হয়ত কেউই কোন দিন ব্যাখ্যা করতে পারবে না।
সবের মধ্যে খুব করে মনে পড়ে ঐ মেয়েটাকে, নামটা যে কি ছিল -- মনে পড়ছে না। একটা অপেক্ষা, একটা আশা, অনেক স্বপ্ন সাথে করে সে আমার এখানে পা রেখেছিল। আশেপাশের মানুষের কাছে শুনতাম, একটা ছেলে আস্তে বলেছিল তাকে, নতুন সংসার বোনবার স্বপ্ন দেখিয়ে। কিন্তূ, মূহুর্ত দিনেই ছেলেটা এল না। সেকেন্ড থেকে মিনিট, মিনিট থেকে ঘন্টা, ঘন্টার পর ঘন্টা, দিনের পর দিন, বছর পেড়িয়ে গেল। এখানকার মাটি থেকে মেয়েটি আর 'পা' তুলতে পারলো না। হয়ত ফেরার পথটা নিজে হাতে বন্ধ করে এসেছিল সে। কেউ তাকে ভিখিরি বলে চিনলো, কেউবা পাগল বলে 'দূর ছাই' করল। বেশ কিছুদিন হল মেয়েটাকেও আর দেখতে পারছিনা। অনেকে আসলো, অনেকে গেল; শুধু আমিই চিরস্থায়ী হয়ে রয়ে গেলাম।
কিছুদিন থেকে আমদানী হয়েছে একটা ছোট ছেলের। রাতের নিস্তব্ধতার বুক চিড়ে কাল প্রথম যখন ওর কান্নার শব্দ শুনলাম, তখনই বুঝেছিলাম --  এখানকার নতুন পৃথিবীতে ছেলেটিও নতুন। ধীরে ধীরে সব অভ্যাস হয়ে যাবে। চোখের জল মনেই আটকে রেখে কি করে গালাগাল দিয়ে শক্ত হাতে নিজের কাজ উদ্ধার করতে হয়, সেটাও রপ্ত করে নেবে।
কোন দিন হয়ত কোন প্রকার সমাধান আমি দিতে পারবো না, হয়ত বা কিছু কিছু সমস্যা এমন আছে,যার সুখকর সমাধান সম্ভবই নয়। শুধু বোবা সাক্ষী হয়ে থাকাটাই হয়ত আমার 'ভাগ্য'তে লেখা আছে।  


আমার পরিচয়.... হমম্‌...... সেটা না হয় উহ্যই রইলো । অজানা, অশীতিপর এক স্টেশনের নাম বললে কেই বা আর চিনবে !



Friday, May 7, 2010

... উত্তর ....


বালখিল্য  
হারিয়ে গেল .... 
অভিনয়ের অস্তরাগে ।
অবদমিত কান্না আর
কবিতার বৈরাগে ।
বসন্ত আসার আগে
নামলো সন্ধ্যা,
আরতি ভুলে 
করলাম .. অসীম
প্রতীক্ষা ।
মনকে দিলাম শান্তি,
গাইলাম ফিরে আসার 
প্রশস্তি,
আবার সূর্য উপহার দিল
নতুন বৃষ্টি ।
দিন দিয়ে গেল আকাঙ্খা 
 

হাজার,
এরপর হারালো দোলাচল,
মুছলো আশার বাঁধন;
ঠোঁটে রাগ আর মনে ভালবাসা নিয়ে
রয়ে গেল একাকীত্বের 
কৃচ্ছ সাধন ।