Followers ...

Saturday, July 30, 2011

পাঁচমিশেলী .....



সকলের কিছু না কিছু সমস্যা ছিল সেদিন ।
   

অরিন্দম-দিপালীর ঝগড়া, তারপর রাতের খুনসুটির পরে এক বিছানায় গায়ে গা লাগিয়ে " আর আমরা কোনোদিন ঝগড়া করব না " -- আজ পর্যন্ত বার সতেরো বলা....


খগেন খুড়োর ঘরের আকাশে টালি লাগানোর টাকা জোগাড় করার সমস্যা ...


স্কুলের পরীক্ষা এতবার আসে, আর   Birthday party মাত্র একবার ---‘not fair’ বলে পড়তে বসা রোমির  সমস্যা ......


সাতাশ হাজারের এই চাকরী না মাত্র পচিঁশ হাজারের চাকরী আর সাথে অফিসের গাড়ী পাওয়ার সুবিধে --- দ্বিধা জড়িত জীবনের চাহিদার মধ্যে পড়ে থাকা সুবিমলের সমস্যা ...


স্নাতকতায় ভর্তির লাইনে দাঁড়িয়ে ঘামে নাকাল দ্যূতির সমস্যা আর ওদিকে রাস্তার যানজটে আটকে থাকা কোনো এক বরযাত্রীর লোকেদের সমস্যা ...


এই সবের মাঝে বস্তির পাশের একচালা ঘরটার দাওয়ায় ঠায়ে বসে থাকা শান্তার অপেক্ষা । এত বেলা হয়ে গেল, ছেলেটা এখন এলো না তার। যতই আড্ডা, কাজ থাকুক, দুপুরের খাওয়াটা খেতে মনোজ ঘরে আসে । আজ এলো না ।সারাটা দিন ছেলেটা না খেয়ে আছে এটা ভেবে শান্তাও মুখে কিছু দিতে পারলো না ।                 
 
                     শান্তা যে বাড়ীতে রান্নার কাজ করে, সেখানকার ঠিকে ঝি চাঁপা নাকি মনোজকে কোন এক মেয়ের সাথে ঘুরতে দেখেছে। শান্তার মনে তেমন কিছু নেই। ছেলে কলেজে পড়ছে, এক-আধতা মেয়ে বন্ধু তো আজকাল সকলেরই থাকে। চাঁপাও তো তারই মতন মুখখু-সুখখু মানুষ, আজকালকার ধ্যান ধারণা অত বোঝেনা বলেই এমন বলে। মনোজ তার মা'কে অনেক ভালোবাসে, আর যাই করুক মা'কে সে কষ্ট দেবে না। ছেলে বড় হয়েছে, নিজের ভালোমন্দ সে নিজেই ভালো বোঝে। এই নিজেকে বুঝিয়ে শান্তার মন শান্ত হয়। আবার পরক্ষণেই অস্থির হয়ে ওঠে; সন্ধ্যে হতে চলল, মনোজ তো এখন এলো না !
                       
                    ছুটে আসা চাঁপার আচঁল ঢাকা মুখ দেখেই শান্তার মনটা কেঁপে ওঠে। চাঁপা কিছু না বলেই টানতে টানতে  নিয়ে যেতে থাকে শান্তাকে। "আরে, মুখপুরীটা, দোড়টাও দিতে দিল না, হয়ত বরটা আবার মদ খেয়ে অসভ্যতা আরম্ভ করেছে" -- শান্তা এমনটাই ভাবলো। চাঁপাকে হাজার বার জিগ্যেস করলেও ফোঁপানো ছাড়া মুখ দিয়ে দ্বিতীয় কোন শব্দ বের করে না। লেভেল ক্রসিং ধারে এত ভিড়!  এত ভিড়ে শান্তাকে কেন নিয়ে এল চাঁপা ! শান্তা অঞ্জান হওয়ার আগে এক নেতা গোছের লোকের আওয়াজ শুনতে পেল -------

“ একদম প্র্যাক্টিকাল নয় ছেলেটা । মেয়েদের এদিক ওদিক ঘুড়িয়ে চড়িয়ে ছুঁড়ে ফেলতে হয়, তা নয় প্রথমবার লেঙ্গি খেয়েই ট্রেনের সামনে ছুটলো । নে নে শুরু কররে ভুবন, ছেলেটার নামটার পরে যেন পার্টীর নামটা ঠিক দু'বার থাকে। আর একটু জোরে বলিস ভাই। হাতে সময় নেই একেবারে ... আরে ছেলেটার নামটা যেন কি ছিল ! ... ? "!